বাংলাদেশে একটি সংবাদ প্রকাশে অসঙ্গতিকে কেন্দ্র করে একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আইনের অপব্যবহার হিসেবে দেখছেন গণমাধ্যমকর্মী এবং সংশ্লিষ্টরা।
২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই এর অপব্যহারের সুযোগ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। আবার এটি আলোচনায় এসেছে ২৯শে মার্চ ভোরে সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে নিজ বাসা থেকে মধ্যরাতে আটকের ঘটনায়।
দ্রব্যমূল্য নিয়ে দৈনিক প্রথম আলোতে করা একটি প্রতিবেদনে শিরোনাম এবং ছবির মধ্যে অসঙ্গতির জের ধরে সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে সাদা পোশাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পরে জানানো হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের পেশাগত ভুল-ত্রুটি শুধরানোর জন্য অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন উপায় আছে। আইনী পন্থায় এগোতে চাইলেও আছে একাধিক আইন। এমনকি একটি বিশেষ বিচারিক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
কিন্তু সব বাদ দিয়ে বারবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহারকে ‘উদ্দেশ্যমূলক’ বলে মনে করছেন গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীরা।
গত ২৯ মার্চ ভোরে নিজ বাসা থেকে তুলে নেয়ার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা একটি মামলায় সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে আদালতে তোলা হয়।
এসময়ের মধ্যে কারা তাকে তুলে নিয়েছিল, কোথায় রাখা হয়েছিল সে সম্পর্কে কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
একইদিন বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান।
সাদা পোশাকে তুলে নেয়ায় কোন বাহিনী শামসুজ্জামানকে নিয়ে গিয়েছিল সেই বিষয়টিও স্পষ্ট ছিল না।
ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই এরকম ঘোলাটে ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করছেন স্বাধীন গণমাধ্যম নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা।
সাংবাদিকদের মধ্যে ভীতি স্থাপন এবং সেলফ সেন্সরশিপের উদ্দেশ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মনে করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি এবং ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম।