বাংলাদেশের সরকার সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবির জন্য এক কোটি ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। এর মধ্যে বড় অংশ কেনা হবে আমেরিকার একটি কোম্পানির মাধ্যমে। এছাড়া বাংলাদেশি একটি কোম্পানিও সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে সরকারকে।
বাংলাদেশের কোম্পানীর কাছ থেকে যে তেল কেনা হচ্ছে, সেটির দাম আমেরিকার কোম্পানির তুলনায় প্রতি লিটারে ৪৩ টাকা বেশি। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এতো বেশি দাম দিয়ে বাংলাদেশর কোম্পানির কাছ থেকে তেল ক্রয় করা হচ্ছে?
বিদেশি কোম্পানি থেকে ক্রয় করা তেলের দাম লিটারপ্রতি নির্ধারন হয়েছে ১৪০ টাকা এবং দেশীয় কোম্পানি থেকে ক্রয় করা তেলের দাম নির্ধারন করা হয়েছে লিটারপ্রতি ১৮২ টাকা ৬৫ পয়সা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি অ্যাসেনচ্যুয়েট টেকনোলজির কাছ থেকে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়, যাতে খরচ হবে ১২৯ কোটি ৫৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।
অপর এক প্রস্তাবে দেশীয় সিটি এডিবল অয়েলের কাছ থেকে ৭০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়, যেখানে ব্যয় হবে ১২৭ কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এতে করে দুই কোম্পানি থেকে ক্রয় করা তেলের মূল্য প্রতি লিটারে পার্থক্য দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৩০ শতাংশ, অর্থাৎ ৪৩ টাকার মতো।
টিসিবি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আরিফুল হাসান যুক্তি দেন, বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে তেল বাংলাদেশে পৌঁছাতে সময় লাগে। আমেরিকার যে কোম্পানির মাধ্যমে সয়াবিন তেল ক্রয় করা হচ্ছে, সেটি আসবে ব্রাজিল থেকে। এই তেল বাংলাদেশে আসতে সময় লাগবে। ফলে তাৎক্ষনিক চাহিদা মেটানোর দেশীয় কোম্পানির কাছ থেকেও তেল ক্রয় করা হচ্ছে।
“এই মুহূর্তে যে কার্যক্রম পরিচালনা করছি তা সামনে মাসের চাহিদার জন্য প্রয়োজন। কিন্তু আমদানিকৃত তেল পৌঁছাতে দুই মাস লেগে যাবে। ফলে পরবর্তী মাসের জন্য যে তেল লাগবে তা তাৎক্ষনিকভাবে লোকাল মার্কেট থেকে কিনে বিক্রি করতে হবে।” বিবিসি বাংলাকে বলেন ব্রিগেডিয়ার হাসান।
প্রতি মাসে ভোক্তা পর্যায়ে বিতরণের জন্য টিসিবির প্রয়োজন হয় দুই কোটি লিটার সয়াবিন তেল। যে সয়াবিন তেল কেনা হচ্ছে ,তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানি থেকে ক্রয় করা করা তেল দিয়ে জুন-জুলাই এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানি থেকে কেনা তেল দিয়ে অগাস্ট-সেপ্টেম্বরের তেলের চাহিদা পূরণ করা হবে বলে জানান টিসিবি চেয়ারম্যান।