1. admin@dailygoyendasongbad.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কক্সবাজার উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরগুলো ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছে। হাকিমপুর থানা পু্লিশ কর্তৃক হিলিতে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার।। পরিবেশ দূষন করে আসছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩ নং পূর্ব ইউনিয়ন ৬ নং ওয়ার্ডের পাচুর বাড়ির লোক জন। আদানির বকেয়া ১৭ কোটি টাকা এ মাসেই পরিশোধ করবে সরকার। চাঁদপুর শহরে অস্ত্র নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের মহড়া, আটক ৮ যে সব কারণে নিষিদ্ধ হলো ছাত্র লীগ। ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পরিক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম। পিতা-মাতার হক আদায়ে সন্তানের যা করণীয়। ফরিদগঞ্জ সি.এইচ.সিপি’র সভাপতি সবুজ পাটোয়ারী সম্পাদক মোশাররফ। লিভ-ইনের প্রস্তাবে মায়ের অনুমতি নিতে বলেন কারিনা

স্ট্রোক কিভাবে বুঝবেন। ডাঃ এম এ কাদের মোল্লা।

দৈনিক গোয়েন্দা সংবাদ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩
  • ৪৩১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

স্ট্রোক একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা এবং দ্রুত এর চিকিৎসা শুরু করা না গেলে রোগীকে পঙ্গুত্ব বরণের পাশাপাশি তার মৃত্যু পর্যন্ত পর্যন্ত হতে পারে।

অন্যদিকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া গেলে রোগীর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব ।

###স্ট্রোক কিভাবে বুঝবেন?
স্ট্রোকের সাথে অনেকে হার্ট অ্যাটাককে গুলিয়ে ফেলেন। কিন্তু দুটি বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা।

স্ট্রোক মূলত মানুষের মস্তিষ্কে আঘাত হানে। ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মস্তিষ্কের কোন অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে মস্তিষ্কের কোষগুলো মরে গেলে স্ট্রোক হয়।

সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য শরীরের প্রতিটি কোষে রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। কারণ এই রক্তের মাধ্যমেই শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছায়।

কোন কারণে মস্তিষ্কের কোষে যদি রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, রক্তনালী বন্ধ হয়ে যায় বা ছিঁড়ে যায় তখনই স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকির সৃষ্টি হয়।

সাধারণত ৬০-বছরের বেশি বয়সী রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকলেও তবে ইদানীং তরুণ এমনকি শিশুরাও স্ট্রোকে আক্রান্ত আক্রান্ত হচ্ছেন।

তবে গবেষণায় দেখা গেছে নারীদের তুলনায় পুরুষদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

স্ট্রোক তিন ধরনের হয়ে থাকে।
১)মাইল্ড স্ট্রোক ২) ইসকেমিক স্ট্রোক ৩) হেমোরেজিক স্ট্রোক।

*****মাইল্ড স্ট্রোকে রোগীর মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ সাময়িক বন্ধ হয়ে আবারও চালু হয়। এটি মূলত বড় ধরণের স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ।

******ইসকেমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের ও শরীরের অন্যান্য স্থানের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধে।

******হেমোরেজিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের রক্তনালী ছিঁড়ে রক্তপাত হয়।।

স্ট্রোক, মস্তিষ্কে কতোটা ক্ষতি করবে এটা নির্ভর করে এটি মস্তিষ্কের কোথায় ঘটেছে এবং কতোটা জায়গা জুড়ে হয়েছে, তার ওপর।

তবে এখানে সবচেয়ে জরুরি হল ‘সময়’। যদি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হয় তাহলে মৃত্যুমুখ থেকে রোগীকে স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।রোগী যতো দ্রুত চিকিৎসা পাবে, ক্ষতির আশঙ্কা ততোই কমবে।

#####লক্ষণ দেখে দ্রুত ব্যবস্থা
স্ট্রোকের লক্ষণ একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হয়। অনেকে স্ট্রোক হওয়ার কিছুক্ষণ পর স্বাভাবিক হয়ে যান। এ কারণে আর চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

স্ট্রোকের সাধারণ কিছু লক্ষণ হল:

**আচমকা হাত, পা বা শরীরের কোনও একটা দিক অবশ হয়ে যাওয়া। হাত ওপরে তুলতে না পারা।
**চোখে ঝাপসা/ অন্ধকার দেখা।
**কথা বলতে অসুবিধা হওয়া বা কথা জড়িয়ে যাওয়া।
**ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া।
**জিহ্বা অসাড় হয়ে, মুখ বেঁকে যাওয়া।
**শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে পড়ে যাওয়া/জ্ঞান হারানো।
হঠাৎ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বাজ পড়ার মতো তীব্র মাথাব্যথা।
**বমি বমি ভাব, বমি, খিঁচুনি হওয়া।

## লক্ষণ ও পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে চিকিৎসকরা একটি শব্দ মাথায় রাখতে বলেছেন। সেটা হল: FAST

এখানে F = Face মুখ বেঁকে যাওয়া, A = Arm হাত অবশ হয়ে আসা, S = Speech কথা জড়িয়ে যাওয়া বা এবং T = Time যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া।

এ ধরণের লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে বিছানায় বা মেঝেতে কাত করে শুইয়ে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে হবে না হলে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

**রোগীকে বাতাস করতে হবে, অথবা আলো বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে রাখতে হবে। রোগীর আশেপাশে ভিড় করে কান্নাকাটি করা যাবে না।

**গায়ে থাকা কাপড় ঢিলেঢালা করে দিতে হবে যেমন: টাই, বেল্ট, স্কার্ফ, অন্তর্বাসের বাঁধন খুলে দিতে হবে যেন রোগী শ্বাস নিতে পারেন।

**রোগী জ্ঞান হারালে তার মুখ খুলে দেখতে হবে কিছু আটকে আছে কিনা। ভেজা কাপড় দিয়ে মুখে জমে থাকা লালা, খাবারের অংশ বা বমি পরিষ্কার করে দিতে হবে।

এ সময় রোগীকে পানি, খাবার বা কোন ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। কারণ একেক ধরণের স্ট্রোকের ওষুধ একেকরকম।

**এছাড়া হাতে কানে লতিতে বা হাতের আঙ্গুলে সুঁচ ফুটিয়ে রক্ত বের করার যে ভাইরাল উপায় রয়েছে সেটার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই

এসব করলে স্ট্রোকের প্রতিকার তো হবেই না বরং বরং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও রক্তে সংক্রামক ব্যাধি হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে বলে মনে করা হয়।

সম্ভব হলে আগের হাসপাতালে যাওয়ার সময় রোগীর চিকিৎসার ফাইলপত্র সাথে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

মনে রাখতে হবে যে, মানসিক চাপ স্ট্রোকের অন্যতম বড় কারণ।

###প্রথম তিন ঘণ্টা খুব জরুরি

স্ট্রোক লক্ষণ দেখা দেয়ার পর থেকে তিন থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা সময় খুবই ক্রিটিকাল।

এই সময়ের মধ্যে বা তার আগে রোগীকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হলে মৃত্যু-ঝুঁকি অনেকটাই ঠেকানো সম্ভব।

তবে এই সময়কাল একেকজন রোগীর স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। অনেকের তিন ঘণ্টায় যে ক্ষতি হয়, সেটা হয়তো আরেকজনের ক্ষেত্রে আরও পরে গিয়ে হতে পারে।

সাধারণত স্ট্রোকের রোগী সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে আসলে চিকিৎসকরা আই ভি থ্রম্বোলাইসিস চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। চিকিৎসকরা ইনজেকশনের মাধ্যমে এমন একটা ওষুধ দেন যা রক্তনালীর ব্লক ছুটিয়ে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক করে। ওষুধ দেয়ার এই পদ্ধতিকে বলা হয় থ্রোম্বোলাইসিস।

রোগীকে যদি লক্ষণ দেখা দেয়ার ৮ থেকে ১৬ ঘণ্টার মধ্যে আনা হয় তাহলে চিকিৎসকরা সাধারণত মেকানিক্যাল থ্রম্বেকটমি চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।

এই প্রক্রিয়ায় একটি বিশেষ যন্ত্র বা ক্যাথেটার দিয়ে রোগীর রক্তনালীতে জমাট বাঁধা রক্ত অপসারণ করে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।।

এ ধরণের চিকিৎসা শেষে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।

তবে রক্তপাত মারাত্মক হলে মাথার হাড় কেটে মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটিকে চাপমুক্ত রাখা হয়। যেন মস্তিষ্কের সুস্থ অংশ আক্রান্ত হতে না পারে একে বলা হয় ডিকম্প্রেস ক্র্যানিয়্যাকটমি।

হাসপাতালে নেয়ার পর পর চিকিৎসকরা লক্ষণ বুঝে রোগীর মাথার , সিটি-স্ক্যান সেইসঙ্গে ব্লাড সুগার টেস্ট, ইসিজি টেস্ট দিয়ে থাকেন। পরবর্তীতে রোগীর অবস্থা বুঝে এমআরআই ও সিটি এনজিওগ্রাম করার পরামর্শ দেয়া হয়।

এসব টেস্টের ফল দেখেই চিকিৎসকরা তাদের সিদ্ধান্ত নিয় থাকেন।

সাধারণত মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলে স্ট্রোক হয়
ছবির ক্যাপশান,
সাধারণত মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলে স্ট্রোক হয়

স্ট্রোকের প্রধান কারণ ও করণীয়
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী যত অসংক্রামক ব্যাধি আছে, সেগুলোর মধ্যে মৃত্যুর দিক থেকে হৃদরোগের পরেই স্ট্রোকের অবস্থান।

এছাড়া পঙ্গুত্বের অন্যতম বড় কারণ স্ট্রোক। দিন দিন এতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।

উন্নত বিশ্বের তুলনায় নিম্ন আয়ের দেশে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি বলে মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতি এক হাজার মানুষের মধ্যে ১১ জনই স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।

এবং এতে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ উচ্চ রক্তচাপ। তবে আরও কয়েকটি কারণে স্ট্রোক হতে পারে, সেগুলো হল:

**রক্তে কোলেস্টোরেলের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হলে।
**উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকলে। হৃদরোগ থাকলে।
**মানসিক চাপ, অতিরিক্ত টেনশন, অবসাদের মতো মানসিক সমস্যা থাকলে।
**সারাদিন শুয়ে বসে থাকলে, কায়িক পরিশ্রম না করলে, ওজন অস্বাভাবিক বেড়ে গেলে।
**অস্বাস্থ্যকর অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস। বিশেষত অতিরিক্ত তেল ও চিনিযুক্ত, ভাজাপোড়া খাবার ও পানীয় খেলে।
**ধূমপান, তামাক-জর্দা বা অন্যান্য মাদক সেবন, মদপান।
**নিয়মিত স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে স্ট্রোকের ঝুঁকি পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

এক্ষেত্রে কয়েক টা পরামর্শ :

  1. **উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা।
    **অতিরিক্ত তেলচর্বি ও চিনি-লবনযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড এড়িয়ে পুষ্টিকর ডায়েট মেনে চলা।
    **ধূমপান, জর্দা-তামাক, মাদক সেবন, মদপান এড়িয়ে চলা।
    **প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম।
    **শরীরচর্চা বা নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করা। ওজন ঠিক রাখা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ দৈনিক গোয়েন্দা সংবাদ
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park