দৈনিক গোয়েন্দা সংবাদ।
সারা দেশ
সারা দেশচট্টগ্রাম
জলদস্যুর কবলে বাংলাদেশি জাহাজ
অডিওবার্তায় নাবিক–‘সাহরির জন্য সামান্য খাবার দিয়েছে’
মোঃ মহিন খান , নোয়াখালী
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৭ এএম
মো. আনোয়ারুল হক রাজু
মো. আনোয়ারুল হক রাজু। ছবি: সংগৃহীত
ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিকের মধ্যে এবিল সি-ম্যান (নাবিক) মো. আনোয়ারুল হক রাজু (২৯) রয়েছেন। তিনি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর গ্রামের আজিজুল হক মাস্টারের ছেলে।
রাজু ৭ বছর ধরে জাহাজে কাজ করছেন। গত বছরের জুলাইয়ে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে রাজু তৃতীয়।
রাজুর অপহরণ হওয়ার সংবাদে দুশ্চিন্তায় রয়েছে তাঁর পরিবার। জাহাজটির সব নাবিককে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে তাঁর পরিবার।
জলদস্যুরা জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর কয়েকবার বাড়িতে ফোন দিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজু।
রাজুর ছোট ভাই মো. জিয়াউল হক রনি জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর ভাই ম্যাসেজ পাঠান। ম্যাসেজ পাওয়ার পর তাঁরা যোগাযোগের জন্য অনেক চেষ্টা করেন। পরে চট্টগ্রাম অফিসে ফোন দিলে তারা নিশ্চিত করে যে তাদের জাহাজটা ছিনতাই হয়েছে। পরে ইফতারের সময় রাজু ফোন দিয়ে জানান যে, তাদের জাহাজটা ছিনতাই হয়েছে। জাহাজটা এখন জলদস্যুরা সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
রনি বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে রাজু আবার ফোন দেন। রাজু তাঁকে জানান, ওখানে যেতে তাদের দুই-আড়াই দিন লাগবে। হয়ত ওখানে নিয়ে গেলে আর যোগাযোগ করতে পারবেন না। ওখানে নিয়ে গেলে তাদের জলদস্যুদের আরেক গ্রুপের কাছে তুলে দেবে বলে জানান রাজু। ফোন রাখার আগে তিনি দোয়া করতে বলেন।
রাজুর বন্ধু ইমরান বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর ফোনে অডিওবার্তায় ঘটনাটি জানান রাজু। অডিওবার্তায় দোয়া চেয়ে রাজু বলেন, বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে।
এরপর রাজু তাঁর বন্ধু ইমরানকে মঙ্গলবার রাতে আরেকটি অডিওবার্তা পাঠান। ওই অডিওবার্তায় রাজু বলেন, ‘সবাইকে একটি জায়গায় আটক করে রেখেছে। আমাদের সাহরির জন্য সামান্য খাবার দিয়েছে। আমরা খুব ভয়-ভীতির মধ্যে আছি।’
রাজুর বাবা আজিজুল হক মাস্টার বলেন, ‘আমার ছেলে রাজু বাংলাদেশ শিপিং কোম্পানির কবির স্টিলে চাকরি করে। গত চার মাস আগে সে জাহাজে ওঠে। জাহাজটা মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিল। পথিমধ্যে সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজটিকে হাইজ্যাক করে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। জলদস্যুরা জাহাজটি তাদের আস্তানায় নিয়ে যাচ্ছে। জাহাজে থাকা আমার সন্তানসহ সবাই ভয়-ভীতির মধ্যে আছে। দস্যুরা তাদের সবাইকে একে একে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। তাদের চিন্তায় আমরা খুবই ব্যথিত। তার মা কান্নকাটি করতেছে। তাদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং আমাদের এলাকার মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি।’
রাজুর মা দৌলত আরা বেগম জানান, এশার নামাজের পর প্রতিদিন মোবাইল ফোনে ছেলের সঙ্গে তার কথা হয়। ছেলেকে দ্রুত ফিরে পেতে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।