নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরের পৈতৃক সম্পত্তি বেহাত হওয়া নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দেন। যেখানে তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় বিএনপি সমর্থিত একটি গোষ্ঠি তাদের পৈতৃক সম্পদ জবরদখল করেছে।
জুলকারনাইন সায়ের খানের এই অভিযোগের পর চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিককে শোকজ করেছে দলটি। রবিবার বিএনপির দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ফরিদ আহমেদ মানিকও দল থেকে শোকজ করার বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন।
বিএনপির সূত্র জানায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানিকের বিরুদ্ধে প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তাদের পৈতৃক সম্পত্তি দখলের যে অভিযোগ তোলেন, সেটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হয়। এরপর তিনি মানিককে শোকজ করার নির্দেশ দেন।
শনিবার ফেসবুকে এক পোস্টে জুলকারনাইন সায়ের বলেন, ‘বেশ ঝামেলার মধ্যেই পড়লাম। চাঁদপুরের পৈতৃক সম্পদ বেহাত হওয়ার দশা। যদিও আমার ধারণা নাই কোথায় কি আছে। আমার চাচা ও অন্যান্য আত্মীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী স্থানীয় বিএনপি সমর্থিত একটি গোষ্ঠি আমাদের পৈতৃক সম্পদ জবরদখল করেছে। আর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসিনা নামের এক মহিলা চিকিৎসক এবং তার স্বামী নূরু ইঞ্জিনিয়ার এসবের নেপথ্যে কাজ করছে।’
‘আজ বিএনপির স্থানীয় নেতা ফরিদ উদ্দিন মানিকের সঙ্গে আমার চাচারা সাক্ষাৎ করলে, তাদেরকে বলা হয়েছে “আপনি তো আওয়ামী লীগ করতেন, ভিটা থেকে যদি আপনাকে উচ্ছেদ করে দেই তাহলে কি করবেন? আপনাকে ভিটা থেকে উচ্ছেদ করার ক্ষমতা আমার আছে।’’
প্রবাসী এ সাংবাদিক ফেসবুক পোস্টে আরও বলেন, ‘আমি কখনোই আমার ব্যক্তিগত সমস্যা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করতে চাইনি। কিন্তু এই যদি হয় অবস্থা তাহলে তো সমস্যা ভয়াবহ।’
এদিকে দল থেকে শোকজের বিষয়টি স্বীকার করেছেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদ আহমেদ মানিক। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমাকে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে শোকজের বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমি আজকালের মধ্যেই উত্তর দেবো। আশা করছি দল আমার জবাবে সন্তুষ্ট হবে।’
উল্লেখ্য, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং তার ভাইদের নিয়ে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা যে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করেছিল তার মূল সূত্র ছিলেন সামি খান। দেশের বিভিন্ন আলোচিত ইস্যুতে সরব থাকা এ অ্যাক্টিভিস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় অনলাইনে এ আন্দোলনের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
এছাড়াও সাংবাদিক সামি ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে একাধিক গোপন তথ্য প্রকাশ করেন। ‘ওরা প্রধানমন্ত্রীর লোক’ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য সামি ও তার তদন্ত টিম ২০২২ সালে ‘বেস্ট হিউম্যান রাইটস জার্নালিজম’ বিভাগে অ্যামনেস্টি মিডিয়া পুরস্কারও অর্জন করে।