Apollotv24.com
আমলে (১৬০৫-১৬২৭) শবে বরাত উদযাপনের সময় হালুয়া মিষ্টি জাতীয় খাবার বিতরণ ও আলোকসজ্জা করা হত বলে লিখেছেন তিনি।
১৮৮০ সালে প্রকাশিত বৃটিশ পাদ্রী এডওয়ার্ড সেলের লেখা বই ‘ফেইথস ইন ইসলামে’ উঠে আসে যে সেসময় আতশবাজির পেছনে বিপুল পরিমাণ খরচ করা হত। এডওয়ার্ড সেল ১৮৬৫ সাল থেকে তৎকালীন ভারতবর্ষের মাদ্রাজে পাদ্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অন্যদিকে, হালুয়া তৈরি করে আত্মীয় ও স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে বিতরণ করার সাথে উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নেয়ার সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
তিনি বলছিলেন, “আমরা জানি যে রাসুলুল্লাহ সা: মিষ্টি খুব পছন্দ করতেন। তার পছন্দের জিনিসকে উম্মতরা পছন্দ করবেন, সেটাও তাকে পছন্দ করার একটা ধরন। ফলে মিষ্টি হিসেবেই হালুয়া বানানোর প্রচলন শুরু, কারণ হালুয়া বানানোর উপকরণ এই অঞ্চলে রয়েছে।”
“আর আনন্দের ভাগ অন্যদের দেয়ার জন্য বিতরণের রেওয়াজ তৈরি হয়েছে। এর সাথে ধর্মীয় অনুভূতি আর সামাজিকতা রক্ষা – দুটো বিষয়ই জড়িত রয়েছে।”
ঢাকার নবাবরা জাঁকজমকের সাথে শবে বরাত পালন করতেন
বাংলাদেশে যেভাবে প্রচলন হলো
বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডে শবে বরাত পালনের সবচেয়ে পুরনো প্রমাণ পাওয়া যায় উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, প্রায় দেড়শো বছর আগে।
সেসময় ঢাকার নবাবরা ঘটা করে শবে বরাত পালন করতেন বলে বলছিলেন ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, যিনি বাংলাদেশের উৎসবের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছেন ও বই লিখেছেন।
তিনি বলেন, সে সময়ে হিন্দুদের আধিপত্য থাকার কারণে সেটিকে মোকাবেলা জন্য ঢাকার নবাবরা শব-ই-বরাত জন্য অনেক বড় আয়োজন করতো।
এতে ঢাকার নবাবদের মুসলমান পরিচয় এবং আধিপত্য – এ দুটো বিষয় একসাথে তুলে ধরার প্রয়াস দেখা যেত।
অধ্যাপক মামুন বলেন, “নবাবরা যেহেতু মুসলিম ছিলেন এবং ঢাকাকে তারা নিয়ন্ত্রণ করতেন, সেজন্য উৎসবগুলোকে তারা গুরুত্ব দিতেন। এর মাধ্যমে নবাবদের আধিপত্য, মুসলমানদের আধিপত্য এবং ধর্ম পালন এই তিনটি বিষয় একসাথে প্রকাশ হতো।”
১৯’শ শতকের শেষের দিকে ঢাকায় শবে বরাত পালন মুসলিম পরিচয় প্রকাশের বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। এমনটাই বলছেন অধ্যাপক মামুন।
সেই ধারাবাহিকতায় শবে বরাত একটি বড় ধরনের উৎসবে পরিণত হয়েছে।
তবে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের মতে আরো আগে থেকেই বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডে শবে বরাত পালন হয়ে আসছে।
“আরব আর চীনা বণিকরা যখন সাগরপথে ব্যবসা করতে আসতো, তখন চট্টগ্রাম অঞ্চলে তাদের জাহাজ ভিড়তো। সেসময় তাদের অনেকেই এখানে থেকে যেতেন। তাদের মাধ্যমে ইসলামিক রীতি-রেওয়াজের সাথে সেখানকার মানুষের পরিচয় হয়েছিল।”
তার মতে ঢাকার নবাবরা জাঁকজমকের সাথে শবে বরাত পালন করলেও তারও কয়েকশো’ বছর আগে থেকেই বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডের মানুষ এই রেওয়াজের সাথে পরিচিত ছিল।
Apollotv24.com
সম্পাদক ও প্রকাশক
লায়ন ডাঃ এম এ কাদের মোল্লা।
Leave a Reply